নিজে নিজে ব্রুনাই টুরিস্ট ভিসা করুন

ব্রুনাই টুরিস্ট ভিসা করতে আপনাকে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে আপনার ভিসা হয়ে যাবে। বিশেষ করে তারা ডকুমেন্ট গুলো ভালো করে চেক করে থাকে। নিচের
চেক লিস্ট মিলিয়ে নিয়ে যাবেন তাহলে আশাকরি আপনার ডকুমেন্ট রিসিভ ও ভিসা হবে।
১। আবেদন ফর্ম ( ওয়েব লিঙ্ক নিচে দেওয়া আছে) ।
২। দুই কপি ছবি (পাসপোর্ট সাইজ ম্যাট পেপা।
৩। এনআইডি এবং জন্ম নিবন্ধন ইংরেজী কপি।
৪। ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সলভেন্সি , ব্যাংকের চেক ও এটিএম কার্ড সাথে রাখবেন। ব্যাংক চেক দেখে ফেরত দিবেন । তবে যে কোন একটা পাতা ফটোকপি জমা দিতে হবে। এটিএম কার্ড দেখতে চাইতে পারে। তবে সেইম ব্যাংক সব থাকতে হবে। ব্যাংকে ৩ লাখের নিচে টাকা না রাখা ভালো।
৫। টিন সার্টিফিকেট কপি ( সর্বশেষ) ।
৬। ফ্লাইট বুকিং কপি ( শুধু বুকিং কপি দিবেন) ।
৭। হোটেল বুকিং কপি
৮। পাসপোর্ট ইনফো পেজ কপি, পূর্বে যত ভিসা আছে সব সিল সহ ফটো কপি দিতে হবে আর যদি পাসপোর্ট হারিয়ে যায় তাহলে জিডি কপি (অনলাইন) । অর্থাৎ আপনার ট্রাভেল হিস্ট্রি প্রিন্ট করে নিয়ে যাবেন।
৯। পেশাগত প্রমানঃ চাকরী করলে আইডি কার্ড, এনওসি এবং ব্যবসা করলে ট্রেড লাইসেন্স ( নোটারি) ।
ভিসা ফি ১৪০০/- , সময় লাগবে ৫ কর্ম দিবস, তিন মাসের ভিসা দিয়ে থাকে। পাসপোর্ট মেয়াদ অবশ্যই আপনার ট্রাভেল থেকে ৬ মাসের মেয়াদ থাকতে হবে।
আবেদন ফর্ম এই লিঙ্ক পাবেন। ডেমো ফর্ম লাগলে আমাকে ইনবক্স অথবা কমেন্ট করবেন।
বিঃদ্রঃ আপডেট ব্যাংক স্টেটমেন্ট নিয়ে যাবেন। যে দিন যাবেন তার আগের দিন ব্যাংক থেকে নিবেন। আর আপনার চেক এর পাতা ব্যবহার করা থাকলে সেই এমাউন্ট স্টেটমেন্ট থেকে খুঁজে দেখে কারন অনেকে হয়ত ফেক স্টেটমেন্ট দিয়েছিল আগে।

আমাদের একজন গ্রাহকের অভিজ্ঞতা নিচে তুলে ধরা হলো ঃ
আমার ব্রুনাই ভ্রমনের কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছিলাম সেগুলো দেখে অনেকেই ব্রোনায় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানতে চেয়েছেন। তাই আমার কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি।
যেকোনো দেশের ভিসা পাওয়ার সাধারণ যে নিয়মাবলী সেগুলোর বাইরে আমি শুধু ব্রুনাই এর ব্যতিক্রম জিনিসগুলোই আলোচনা করব। সাধারণ নিয়মকানুন সবাই জানেন। ভিসা রিকুয়ারমেন্টআমি আমি কমেন্টে দিয়ে দিব।
১। ব্রুনাই খুব একটা টুরিস্ট ফ্রেন্ডলি কান্ট্রি না, তাই ভিজিট ভিসা খুব কমই দিয়ে থাকে তারা। সে হিসেবে তাদের ভিসা রিকোয়ারমেন্ট ও কিছুটা কঠিন। ব্যাংক স্টেটমেন্টের পাশাপাশি এখানে চেকবুক এবং এটিএম কার্ড শো করতে হয়। চেকবুকে যদি ব্যবহার করা পাতার মুড়ি থেকে থাকে, সেই এমাউন্টের সাথে ডেট অনুযায়ী স্টেটমেন্ট অ্যামাউন্ট ও মিলিয়ে দেখে।
২। অন্যান্য রিকোয়ারমেন্ট এর মধ্যে ওরা একটা কথা কমনলি বলে সেটি হচ্ছে সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করা থাকতে হবে। তবে শুধুমাত্র সিঙ্গাপুর এবং দুই একটা দেশ ভ্রমণ থাকলে ভিসা দেয় না। যতটুকু বুঝেছি তারা কিছুটা ভালো প্রোফাইলের মানুষজনকে ভিসা দেয়।
৩। অন্য দেশের ক্ষেত্রে প্রিভিয়াস ভিসা এবং সিল গুলো পাসপোর্ট জমা দেয়ার পর এমব্যাসি প্রয়োজন মনে করলে কপি রেখে থাকে। তবে ব্রুনাই এম্বিসীতে নিজ থেকে ফটোকপি করে জমা দিতে হবে।
৪। এমপ্লয়মেন্ট ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে ডিল করলেও ভিজিট ভিসায় এপ্লিকেন্টকে সরাসরি ডিল করে থাকে। তারা এজেন্সির মাধ্যমে করেন না। (আমার জানায় ভুল থাকতে পারে)
৫। প্রতিটা ডকুমেন্ট অনেক অনেক বার করে চেক করে এবং অনেক বেশি প্রশ্ন করে। প্রশ্ন করার ধরন এবং কথাবার্তা খুব একটা পোলাইট না (আমার অফিসারের ক্ষেত্রে)।
৬। আমার সময় হোটেল এবং এয়ার টিকেট বুকিং কপি দিয়ে কাজ হলেও শুনেছি ইদানিং কনফার্ম টিকেট ছাড়া একসেপ্ট করে না। এমনকি পিএনআর দিয়ে টিকিট চেক করে।
৭। সিঙ্গেল এবং মাল্টিপল এন্টি ভিসার নিয়ম থাকলেও প্রথমবারের জন্য শুধুমাত্র সিঙ্গেল এন্টি ভিসা দেওয়া হয় তাও মাত্র ৫ দিনের ভিসা। এপ্লিকেশন জমা দেওয়ার পর ৫ কর্ম দিবস সময় নেওয়া হয়।
৮। ই-ভিসাবা স্টিকার নয়, পুরনো আমলের বড় একটি সিল মেরে দিয়ে সেখানে কলম দিয়ে ইনফরমেশন গুলো লিখে দেওয়া হয় অতঃপর এম্বুস সিল দেওয়া হয়।
৯। আমি ফিলিপাইন থেকে ব্রুনাই ভ্রমণ করি এবং ব্রুনাই থেকে মালয়েশিয়ায় চলে যায়। তাই আমার প্লেন ফেয়ার একেবারে কম পড়েছিল।
১০। ব্রুনাইতে টুরিস্ট খুব কম, তারউপর বাংলাদেশ থেকে তো একেবারেই না। তাই ইমিগ্রেশন অফিসার বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখেই ভেবেছিল এমপ্লয়মেন্ট ভিসা। আমার কাছ থেকে ওয়ার্ক পারমিট চাচ্ছিল, এমনকি অন্য কাউন্টারে থাকা আমার টুর পার্টনার থেকেও চাইতেছিল 😁।
১১। শুরুতেই বলেছিলাম তাদের সব আইন-কানুন খুব কড়া এবং অন্য দেশ থেকে কিছু কিছু জিনিস ওদের অনেকটাই আলাদা। আমি খুব দ্রুত ইমিগ্রেশন শেষ করে বের হতে পারলেও আমার সাথের আরেকজন ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি।
তাদের নিয়ম অনুযায়ী ভিসা পাওয়ার পরেও পাসপোর্টে ৪টি পাতা খালি থাকতে হবে ভ্রমণের আগে। অথচ অন্য সবদেশ দুটি চাই। আমার টুর পার্টনার ব্রুনাই ভিসাপাওয়ার পর ওনার পাসপোর্ট এর পাতা শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে উনি পাসপোর্ট রিনিউ করেন এবং নতুন পাসপোর্টে ফিলিপাইন থেকে ডিপারচার করেন। যেই পাসপোর্টে ভিসা সেই পাসপোর্টে এভেলেবল পেজ খালি না থাকা এবং অন্য পাসপোর্টে ডিপারচার সিল থাকার কারণে ইমিগ্রেশন অফিসার এন্টি দিতে অস্বীকৃতি জানান।
পরে উনাকে একজন সিনিয়র ইমিগ্রেশন অফিসার এসে বুঝাতে থাকেন কেন ইমিগ্রেশন করতে পারবে না ওরা। কিন্তু উনি (ট্যুর পার্টনার) ইংলিশে তেমন দক্ষ না হওয়ায় উনি বুঝতে ছিলেননা।তিনি ইমিগ্রেশন অফিসারকে বলেন আমার সাথে আরেকজন আছে যিনি ইংরেজি ভালো বলতে পারেন (আমার কথা) তবে ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করে বাহিরে চলে গেছে। ইমিগ্রেশন অফিসার আমাকে আসার জন্য ফোন দিতে বলে।
হোয়াটসঅ্যাপে আসতে বলার পর আমি আসি। আমার কাছে জানতে চাই আমি কোন ভাষায় কথা বলতে পারি ইংলিশ অথবা মালাই। অতঃপর আমাকে ইংলিশে ডিটেইল বোঝানোর চেষ্টা করে কেন ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি যখন তাদেরকে বললাম মালয়েশিয়া এবং ফিলিপাইনে একই রকম ইস্যুতে প্রবলেম হয়নি তখন তারা বলে এটা ব্রুনাই এখানে ব্রুনাই এর আইন চলে, ফিলিপিন বা মালয়েশিয়ার নয়।
সমাধান কি জানতে চাইলে তারা বলে এয়ারপোর্টে রাতে থাকতে হবে এবং পরবর্তী ফ্লাইটে ম্যানিলাতে ফেরত যেতে হবে। তখন রাত এগারোটা বাজে। দুজন সিকিউরিটি অফিসার ওনাকে উপরে নিয়ে গেলেন এবং রাতে যেখানে থাকতে হবে সেই লাউঞ্জটি (snooze lounge) দেখিয়ে দিলেন। আমি আসার সময় এয়ারপোর্টে গিয়ে সেই লাউঞ্জটি দেখেছি খুবই সুন্দর সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যেটি কিনা ইমিগ্রেশন প্রবলেম হওয়া মানুষ এবং ট্রানজিট যাত্রীদের জন্য। রাতে আমি হোটেলে চলে আসি।
দুর্ভাগ্যক্রমে পরদিন সেই এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ছিলনা মেনিলাতে। তবে ফ্লাইট না থাকাটা পরবর্তীতে সৌভাগ্যের কারণ হয়। এরই মধ্যে পরদিন সন্ধ্যা ছয়টা বেজে গেছে। এমন সময় তারা ডেকে এনে আবারো সব কাগজপত্র এবং পাসপোর্ট দেখে শুনে জানান যে পুরাতন সেই ভিসায় ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা সম্ভব নয় তবে নতুন পাসপোর্টে নতুন করে ফি জমা নিয়ে (B$20) একটি অন-এরাইভাল ভিসা দেয়। এই ভিসার মাধ্যমে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে ১৯ ঘন্টা পর ব্রুনাইতে প্রবেশ করতে দেয়।
তবে একটি কথা না বললেই নয়, যদিও ওনারা আইনের ব্যত্যয় ঘটাতে চাননি তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইমিগ্রেশন এবং সিকিউরিটি অফিসারদের ব্যবহার, সহযোগিতা এবং কথাবার্তা ছিল প্রশংসনীয়। লাউঞ্জে বারবার এয়ারপোর্ট কর্মীরা গিয়ে খোঁজখবর নিতেন এবং খাবার লাগবে কিনা জানতে চাইতেন। এমনকি এয়ারপোর্ট ওয়াই-ফাই তিন ঘন্টার জন্য সচল থাকে বলে ওরা নিজ থেকে একটি ডেডিকেটেড ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড দিয়ে কানেক্ট করে দিয়ে এসেছেন।
১২। ব্রুনাই রাজধানী “বান্দার সিরি বেগাওয়ান” খুবই ব্যয়বহুল একটি শহর। এয়ারপোর্ট থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরত্বে হোটেলের জন্য ট্যাক্সি ভাড়া নিয়েছিল ২৫ ব্রুনায়ন ডলার। ট্রান্সপোর্টেশন হিসেবে ট্যাক্সি ভাড়া অনেক বেশি। তবে লোকাল বাস ভাড়া অনেক সস্তা যেখানেই যাবেন B$1
এখানে রাস্তাঘাটে কোন মানুষ নেই, সবাই যার যার গাড়িতে। জনসংখ্যার তুলনায় গাড়ি অনেক বেশি। মহিলা গাড়ি ড্রাইভ করতে দেখেছি বেশি। লোকাল বাস কিছু থাকলেও সেখানে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ওয়ার্কাররা ছাড়া লোকাল মানুষ থাকে না।
১৩। হোটেল তুলনামূলক এক্সপেন্সিভ। খাবার খরচও বেশি তবে Nasi Katok নামে ব্রুনায়ান একটি খাবার (সম্ভবত তাদের মেইন ডিস) সেটি একেবারেই সস্তা। পার্সেল নিলে B$2, ডাইন-ইন B$4 । বান্দার (Downtown) এলাকায় বাংলাদেশী কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
১৪। দর্শনীয় স্থানসমূহ কাছাকাছি আছে মোটামুটি। এক বা দুইদিনে সম্পূর্ণ ব্রুনাই ভ্রমণ করে দেখে ফেলা যায়।
১৫। এদেশের ছোট্ট একটি এয়ারপোর্ট যেখানে দিনে মাত্র ৪-৫টি ফ্লাইট পরিচালিত হয়। তবে এয়ারপোর্ট খুবই পরিপাটি এবং অনেক সুযোগ-সুবিধা সংঘটিত।
কিছুটা বিরম্বনা পোহানোর পরেও আমার ভ্রমণকৃত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ভালোলাগা দেশ ব্রুনাই। আমি যদি কোন ইনফরমেশন বাদ দিয়ে থাকি জানতে হলে কমেন্ট করুন উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
আপনি যদি আমাদের মাধ্যেমে ভিসা প্রসেসিং করেত আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে নিচের মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারেন ।
এখানে আমাদের সার্ভিস চার্জ যোগ হবে ।
জিলহজ্জ গ্রুপ বাংলাদেশ
আত-তাবলীগ হজ্জ সার্ভিসেস
হজ লাইসেন্স নং -১৩৪২
পর্যটন মন্ত্রনালয় ট্রাভেল লাইসেন্স নং:০০০০৭৪৮
১ণং নতুন ভবন (২য় তালা) জিলা পরিষদ মার্কেট পূর্ব আগানগর, দক্ষিন কেরানীগঞ্জ,ঢাকা-১৩১০
IATA অনুমোদিত এয়ার টিকেটিং এজেন্টঃ ৪২৩৩৫৯০৪
যোগাযোগঃ ইমু ও হোয়াটসএপ
+8801711165606
+8801886377899
ধন্যবান্তেঃ মনোয়ারুল ইসলাম ভাই